হেলাল হোসেন কবির: দলে সবাই আছেন কিন্তু বাস্তবে এক নেতার লালমনিরহাট জেলা বিএনপি। প্রান্তিক পর্যায়ে এখন এই নিয়ে বেশ আলোচনা, কে হবেন আগামীর নেতা। এ কারণে জনগণের ভোটের মাঠ কঠিন হয়ে গেছে দলটি মধ্যে। বাস্তবতা মিলেছে গত পৌরসভার নির্বাচনে।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা নির্বাচনের জন্য সরাসরি ব্যালট পেপারে ভোট দেন ওয়ার্ড বিএনপির সদস্যরা।
পুরুষ ও নারী বিএনপির সদস্যরা মিলে ওয়ার্ড পর্যায়ে সভাপতি, সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতা বাছাই করা হয়।
এই পদ্ধতিকে কেউ কেউ পজিটিভ দেখলেও দলের মাঝে রয়েছে ভিন্ন হিসাব। কেউ কেউ বলছেন, দল যদি আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে তার আগে এভাবে সাধারণ বিএনপি কর্মীদের চিহ্নিত করে বিপদের দিকে ফেলে দেওয়া ঠিক হচ্ছে না। বরং এই পরিবারগুলোতে ভোটের আগে চাপ আসতে পারে। তাই এই উৎসব না করাই ভালো।
অবশ্য বিএনপির সদস্যরা এই ভোট দিয়ে আসার পর শুনতে হচ্ছে নানান জনের নানা কথা।
বিভিন্ন জনের নামে দেওয়া রাজনৈতিক মামলা কাঁধে ঘুরে বেড়ানোদের মনে বেশ অতৃপ্তি দেখা যাচ্ছে। তাদের কারও কারও দাবি একজন ব্যক্তি কেন্দ্রীয় ভাবে জাহির করতে সাধারণ বিএনপির কর্মীদের নিয়ে বরাবরই বিভিন্ন উৎসব করে থাকে। তারপর বিপক্ষ দলের মামলায় কোর্টবারান্দায় ঘুরলেও কোনদিন খবর রাখেনা। এই তৃণমূল কর্মীদের নামে পরবর্তীতে কোন রাজনৈতিক কারনে মামলা হলে এর দায়িত্ব কে নিবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে উদ্যোগ নেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ (অবঃ) আসাদুল হাবিব দুলু।
কিন্তু এখানেও রয়েছে নাকি চক্র আচরণ।
সরিফত নামের বিএনপির এক ওয়ার্ড সদস্য বলেন, যদি ১নং ইউনিয়ন মোগলহাট বা দুলু সাহেব নিজ ইউনিয়ন বড়বাড়ি থেকে ভোটের মাধ্যমে নেতা বাছাই শুরু করলে তাহলে ভালো হত। মহেন্দ্রনগরকে ব্যবহার করে আগামী দিনের জন্য আমাদের চলাফেরার সমস্যা করে দেওয়া হলো। যার ফলে আমাদের এলাকার গ্রামীণ রাস্তাগুলো পাকা করনে বাঁধা পড়তে পারে এই সরকারের কাছে। কেননা বিএনপির এলাকা হওয়ায় ইতিমধ্যে উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছি আমরা।
জানা যায়, ৩হাজার ৩শত জনকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত এই নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করেন জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মহিউদ্দিন আহমেদ লিমন।
তফশীল ঘোষণা করা হয় সেই তফশীল অনুযায়ী শুক্রবার (১ অক্টোবর) বেলা ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত ভোট চলে মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা নির্বাচনে। সে কারনে আলাদাভাবে প্রার্থীদের প্রতীক সম্বলিত পোস্টাও করা হয়।
মহন্দ্রেনগর ইউনিয়নের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. মহিউদ্দিন আহমেদ লিমন বলেন, ওয়ার্ড বিএনপির তালিকাভুক্ত সদস্যরা নিজেদের পরিচয়পত্র নিয়ে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করেছেন। আর অন্যান্য নির্বাচনের মতোই বিএনপির এ নির্বাচনেও সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক বলেন, বিএনপি পুরোপুরি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তৃণমূলের নেতা সরাসরি নির্বাচনের ভোটের পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। পাশাপাশি মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ারও এটি একটি প্রতিবাদ।